যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের বিদেশি নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য নিষিদ্ধ করল ট্রাম্প প্রশাসন

- আপডেট সময় : ১২:১৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
- / ১ বার পড়া হয়েছে
বিদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের আর ভিনদেশের নির্বাচন নিয়ে মতামত দিতে নিষেধ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
গতকাল বৃহস্পতিবার রয়টার্সের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নোট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী স্বচ্ছতা ও গণতন্ত্রের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসরণ করে আসা দীর্ঘদিনের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এল।
১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিশ্বজুড়ে সব মার্কিন দূতাবাসে পাঠানো ওই তারবার্তায় বলা হয়েছে, এখন থেকে এ দপ্তর নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো বিবৃতি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেবে না, যদি না এতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ‘সুস্পষ্ট ও জরুরি’ স্বার্থ জড়িত থাকে।
‘যখন কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করা যথাযথ বলে বিবেচিত হবে, তখন আমাদের বক্তব্য হবে সংক্ষিপ্ত। বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানানো ও প্রয়োজনে অভিন্ন পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের উল্লেখ করার মধ্যে তা সীমাবদ্ধ থাকবে’, বলা হয়েছে ‘সংবেদনশীল’ চিহ্নিত ওই বার্তায়।
বার্তায় বলা হয়, ‘বিদেশের কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতা কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’
বার্তায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো মন্তব্য শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে অথবা দপ্তরের মুখপাত্র করবেন। কোনো মার্কিন কূটনীতিক শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া এমন বিবৃতি দিতে পারবেন না।
নির্দেশনায় গত ১৩ মে সৌদি আরবের রিয়াদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া এক ভাষণের উল্লেখ রয়েছে। সেই ভাষণে ট্রাম্প বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কীভাবে শাসন চলবে তা ‘পশ্চিমা হস্তক্ষেপকারীরা’ বলে দিচ্ছে—এমনটা আর চলবে না। যুক্তরাষ্ট্র এখন সে পথে আর হাঁটছে না; বরং অংশীদারত্ব গড়তে চাচ্ছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে অটল থাকবে এবং অন্য কোনো দেশ সেই পথ বেছে নিলে তা উদ্যাপন করবে। তবে প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেছেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত স্বার্থ যেখানে মেলে, সেখানেই অংশীদারত্ব গড়তে আগ্রহী।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র ই-মেইলে দেওয়া মন্তব্যে বলেন, এতে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব’ রক্ষার ওপর প্রশাসনের জোর দেওয়ার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করা—দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হলেও, সমালোচকেরা প্রায়ই দেশটির দ্বিমুখী নীতির অভিযোগ করে থাকেন, বিশেষ করে মিত্রদেশগুলোর বেলায়।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্র ক্রমে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রসারের নীতি থেকে সরে এসেছে। এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপকে তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বলেও মনে করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন পররাষ্ট্র বিভাগের মানবাধিকার শাখা পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের মতে, এ শাখা হয়ে উঠেছে ‘বামপন্থী কর্মীদের’ একটি প্ল্যাটফর্ম, যারা রক্ষণশীল নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক অভিযান চালায়।