৫০ জন পেশাদার ক্রীড়াবিদের একটি জোট ইসরায়েলকে ইউরোপিয়ান ফুটবলের (উয়েফার) সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এদের মধ্যে আছেন ক্রিস্টাল প্যালেসের মিডফিল্ডার চেইক দুকুরে এবং চেলসির সাবেক উইঙ্গার হাকিম জিয়েখ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘খেলাধুলা নীরব থাকতে পারে না, যখন খেলোয়াড়সহ সাধারণ মানুষ, এমনকি শিশুরাও গাজায় নির্বিচারে গণহত্যার শিকার হচ্ছে।’
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরও আছেন সাবেক অ্যাস্টন ভিলা ফরোয়ার্ড আনোয়ার এল গাজি— যিনি ২০২৩ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনপন্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট দেওয়ার পর জার্মান ক্লাব মাইনৎস ০৫ থেকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন বলে আদালত রায় দেয়।
এছাড়া রয়েছেন সাবেক ইপ্সউইচ টাউন অধিনায়ক স্যাম মরসি, সাবেক লেস্টার সিটি ম্যানেজার নাইজেল পিয়ারসন, ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক মঈন আলি, বক্সার জ্যাক চেল্লি এবং জকি খাদিজাহ মেল্লাহ।
চিঠিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে সুলেমান আল-ওবেইদকে, যিনি ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে পরিচিত ছিলেন। ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের দাবি অনুযায়ী, গত আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় তিনি নিহত হন।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘জীবিত অবস্থায় তিনি খেলাধুলার মাধ্যমে আশা জাগিয়েছিলেন; আর মৃত্যুর মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে, বিশেষত ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে, পদক্ষেপ নেওয়ার কঠিন স্মারক হয়ে উঠেছেন।’
এতে জাতিসংঘের সেপ্টেম্বরের একটি প্রতিবেদনেরও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছিল, ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনী ফিলিস্তিনিদের আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে গণহত্যার ইচ্ছা প্রদর্শন করছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যে দেশকে জাতিসংঘ কমিশন গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছে, তার প্রতিনিধিত্বকারী খেলাধুলার দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ক্রীড়া সংস্থাগুলোর নৈতিক দায়িত্ব।’
চিঠিটি সমন্বয় করেছে নুজুম স্পোর্টস, যুক্তরাজ্যের মুসলিম ক্রীড়াবিদদের প্রতিনিধি সংস্থা। তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও ধর্মনিরপেক্ষ খেলোয়াড়রা ন্যায়বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে এসেছেন।
চিঠির শেষে বলা হয়েছে, ‘আমরা উয়েফাকে আহ্বান জানাচ্ছি, ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করতে, যতদিন না তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে এবং বেসামরিক হত্যা ও গণঅনাহার বন্ধ করে।’
অন্যায়ের মুখে খেলাধুলা নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। নীরবতা মানে হচ্ছে মেনে নেওয়া যে কিছু মানুষের জীবন অন্যদের তুলনায় কম মূল্যবান। আমরা বিশ্বাস করি, সব জাতি ও মানুষের জন্য একই মানদণ্ড— পক্ষপাতহীন ন্যায়বিচার।