চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে শতাব্দীপ্রাচীন লোহাগড় মঠ আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার লোহাগড় গ্রামে অবস্থিত এই মঠটি ডাকাতিয়া নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৪০০ থেকে ৭০০ বছর ধরে।
স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, লোহা ও গহড় নামের দুই জমিদার ভাই এই মঠ নির্মাণ করেন, যাদের নামেই গ্রামের ও মঠের নামকরণ হয়েছে। ধারণা করা হয়, এটি জমিদার আমলের এক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং নদীপথে যাতায়াতকারী মানুষদের কাছে জমিদারবাড়ির অবস্থান বোঝাতে সুউচ্চ মঠটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
বর্তমানে মঠ এলাকায় তিনটি ভিন্ন উচ্চতার মঠ, একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদের অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে একটি মঠের কারুকাজ ও স্থাপত্যশৈলী বিশেষভাবে দৃষ্টিনন্দন। স্থানীয়রা জানান, একসময় এখানে পাঁচটি মঠ ছিল, কিন্তু বর্তমানে মাত্র তিনটি অবশিষ্ট আছে। জমিদার আমলে সাধারণ মানুষের এই এলাকায় প্রবেশ ছিল নিষেধ, আর স্বাধীনতা-উত্তরকালে অনেকেই সোনা বা গুপ্তধনের আশায় মঠের শিখরে উঠে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলেও জানা যায় ।
ঢাকা থেকে প্রায় ১১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লোহাগড় মঠে যেতে চাইলে সড়ক, রেল বা নৌপথে যাওয়া যায়। বিশেষ করে সদরঘাট থেকে নিয়মিত লঞ্চে চাঁদপুর পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা বাজার হয়ে সহজেই মঠে যাওয়া যায়। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক দর্শনীয় স্থান, যেখানে চাঁদপুরের স্বাদু ইলিশের সঙ্গে মিলিয়ে ইতিহাসের ঘ্রাণ মেলে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।