‘পূজা আর রোজা একই বলে জামায়াত নেতারা ঈমানহারা হয়েছেন: মওদুদী ফিৎনা প্রতিহত না করলে দেশে ইসলাম থাকবে না’ ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির দেশের প্রবীণ আলেমেদ্বীন ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রশ্ন করেছেন, যারা পূজা আর রোজা একই বলে, এগুলো কি ইসলাম? এসব কথা বলে তারা ঈমানহারা হয়েছেন। হেফাজত আমির বলেন, মওদুদী ফিৎনা প্রতিহত না করলে দেশে ইসলাম থাকবে না। মওদুদীবাদীরা রাসূলের (সা.) সাহাবাগণকে সত্যের মাপকাঠি মানে না। কুফরি মতবাদ যাতে প্রতিষ্ঠা করতে না পারে সামনের নির্বাচনে জামায়াতকে ভোট দেওয়া যাবে না।
গতকাল ৩ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আন্তর্জাতিক শানে রেসালত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজত আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত উক্ত রেসালাত সম্মেলনে হাজার হাজার তৌহিদি জনতা শামিল হন। এতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতী মুহাম্মদ আলী কাসেমী।
আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী আরও বলেন, জামায়াত নেতারা পূজা এবং রোজাকে একই বলে ঈমান হারা হয়েছেন। তিনি বলেন, মুক্তির মূল পথ রাসূলের (সা.) সুন্নত। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপনায় উক্ত আন্তর্জাতিক শানে রেসালত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
হেফাজত আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আইয়ামে জাহিলিয়াহ,পনের শ’ বছর আগের পৃথিবী। নিকষ কালো আঁধারে ঢেকে যাওয়া চারিদিক। কোথাও নেই সামান্যতম আলো। সত্য ও সভ্যতার জীবন্ত কবর রচনা করেছিলো অসত্য ও অশ্লীলতা। জীবন্ত পুঁতে ফেলা থেকে শুরু করে হেন কোনো অপরাধ নেই, যা তখন ঘটা করে করা হতো না। যেন মানুষের চামড়ার ভেতর জন্ম নেওয়া একেকটা পশু। পাশবিক-পৈশাচিক সকল মন্দ আচরণ বাসা বেঁধেছিলো মানুষের মন-মগজে। খুন, লুণ্ঠন,ছিনতাই, ধর্ষণ হয়ে উঠেছিলো তাদের প্রতিদিনের কাজ।
পৃথিবীর এহেন দুর্দশাগ্রস্ত চরম নাজুক পরিস্থিতিতে ‘কুল মাখলুক’ এর জন্যে রহমত হিসেবে প্রেরিত হন মোহাম্মদ রাসূল (সা.)।নবীজির প্রচেষ্টাতেই পৃথিবী নতুন রূপ ফিরে পায়। শানে রেসালাত সম্মেলনে প্রধান আলোচক পাকিস্তান থেকে আগত করাচীর জামিয়া মাহমুদিয়ার প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতী নূরুল হক (সাবেক এম পি) বলেন, আল্লাহ তাআলা মানুষের সার্বিক কল্যাণ ও সঠিক পথের নির্ণায়ক মাপকাঠি হিসেবে রাসুল (সা.)-কে মানবীয় সকল গুণের অধিকারী করে প্রেরণ করেছেন। তাঁর মাঝে প্রশংসিত সকল গুণের সমাবেশ ঘটেছিলো। আর সেই অনুপম আদর্শের উজ্জ্বল বিভায় পতঙ্গের মতো আছড়ে পড়েছিলো পুরো পৃথিবী। সত্য ও সুন্দরের বিজয় হয়েছিলো তারই হাত ধরে। সভ্যতার চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ পাঠ অধ্যয়নে তো পৃথিবী তার কাছেই ঋণী। পৃথিবী পেয়েছিলো ইতিহাসের সবচেয়ে আলোকিত ও মহিমান্বিত হাতে গড়া সমাজব্যবস্থা। যা এর আগে ও পরে কেউ পারেনি, আর পারবেও না। মুসলিম-অমুসলিম সকলেই যার আদর্শকে মেনে নিয়েছিলো নির্বিবাদে। তিনি ছিলেন পৃথিবীর জন্য শ্রেষ্ঠতম উপহার।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতী খলিল আহমদ কাসেমী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা উবাইদুল্লাহ ফারুক, আল্লামা মুফতী জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা এমরান সিকদার, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মোরশেদ আলম, মাওলানা হাসান মুরাদের যৌথ সঞ্চালনায় আরও বয়ান পেশ করেন মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতী হাবিবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা শোয়াইব জমিরী, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব,মাওলানা মীর কাসেম,মাওলানা উসমান ফয়জী,মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী,মাওলানা মাহমুদ হাসান ফতেপুরী,মাওলানা শফি, মাওলানা শামসুদ্দোহা চৌধুরী, মাওলানা আহমদ দীদার কাসেমী, মাওলানা আবু তৈয়ব আব্দুল্লাহপুরী, মাওলানা উসমান সাঈদী, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুফতী হারুন ইজহার, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতী কুতুব উদ্দিন, ড.নূরুল আবসার আযহারী, মাওলানা ইসমাঈল খাঁন, মাওলানা হেলাল উদ্দিন বিন জমির উদ্দীন,মুফতী মাহমুদ হাসান গুনবী,মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির,মাওলানা মীর ইদরিস নদভী,মুফতী আব্দুল আজিজ,মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ নোমানী,মাওলানা ইবরাহীম,মাওলানা ইদরিস, আহসান উল্লাহ,মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা শোয়াইব বিন ইয়াহইয়া, মুফতী রাশেদুল ইসলাম, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা আনোয়ার শাহ আযহারী, মাওলানা আলমগীর মাসউদ, মুফতী জমির উদ্দিন, মাওলানা নিজাম সাইয়্যিদ প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ইউনুস,মাওলানা ইয়াছিন,জনাব নূর মুহাম্মদ,মুফতী বশিরুল করিম,মাওলানা সাইফুল ইসলাম,মুফতী মাসউদুর রহমান চৌধুরী,মাওলানা হাফেজ আব্দুল মাবুদ,মাওলানা ফোরকান আলী প্রমূখ। আন্তর্জাতিক শানে রেসালাত সম্মেলনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার তৌহিদি জনতা শামিল হন।