চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগের সময় গুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহসহ চারজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, ইদানিং তিনি নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করতেন। আর গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইরফানুল হক শান্ত ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক। গুলিবিদ্ধ আমিনুল হক ও মর্তুজা হকও বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন চালিতাতলী পূর্ব মসজিদের কাছে তারা গুলিবিদ্ধ হন।
তাদের অনন্যা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সরোয়ারের মৃত্যু হয় বলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমীরুল ইসলাম জানান। তিনি বলেন, “এরশাদ উল্লাহ সাহেব নির্বাচনী প্রচারে চালিতাতলী এলাকায় এসেছিলেন। সেখানে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।”
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত এক নেতা বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-পাঁচলাইশ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া এরশাদ উল্লাহ চালিতাতলী পূর্ব মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে জনসংযোগ শুরু করেন।
“তখন তার সঙ্গে থাকা সরোয়ার বাবলাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এসময় পাশে থাকা এরশাদ উল্লাহ এবং অন্যরা গুলিবিদ্ধ হন।”
এটি বিএনপি বা সহযোগী সংগঠনগুলোর ‘নিজেদের মধ্যে কোনো ঘটনা নয়’ বলে ওই বিএনপি কর্মীর দাবি।
সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন কাদের বলেন, “হামলাকারীরা বেশ কয়েকজন ছিল। সাত-আট রাউন্ড গুলি হয়েছে। এরশাদ উল্লাহ সাহেবের পায়ে গুলি লেগেছে। শান্তর গলায় এবং সরোয়ারের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে।”
নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার ছোটভাই মো. আজিজও ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন।
তিনি বলেন, “মাগরিবের নামাজের পর লিফলেট বিতরণ শুরু হয়। তখন এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। যারা গুলি করেছে তারা জনসংযোগে আসা লোকজনের সাথে মিশে ছিল, বাইরেও ছিল।”
আজিজ বলেন, “আমাদের দুই ভাইকে বিভিন্ন সময়ে মেরে ফেলার হুমকি দিত। এজন্য আমরা সবসময় সাবধান থাকতাম। আজকের এই ঘটনা কল্পনারও বাইরে। সন্ত্রাসীরা নোয়া মাইক্রোবাসে করে এসেছিল।”
কারা হুমকি দিত জানতে চাইলে আজিজ কোন জবাব দেননি।
এদিকে হতাহতের এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। এর মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।”
তিনি বলেন, “যারা রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে এ ঘটনায় তাদের হাত থাকতে পারে।”
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে এই প্রথম কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটল।









