ওজন বেশি থাকা বা ওবেসিটি বহু অসুখের কারণ। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, ওজন বেশি থাকার সমস্যাকেই এখন রোগ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই ওজন কমাতে হবে দ্রুতগতিতে। তবে খুব কঠিন কোনো ব্যায়াম নয়, বরং হেঁটেই কমাতে পারেন ওজন।
জন বেশি থাকার মানে শরীরে অত্যধিক মেদ। আর শরীরে মেদ বাড়লেই একাধিক অসুখ পিছু নেয়। আসলে অতিরিক্ত ফ্যাট মেটাবলিজমের হারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ কারণেই মূলত বিপাকীয় নানা অসুখ হয়।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, ওজন বেশি থাকা ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখ, স্ট্রোক ইত্যাদির আশঙ্কা থাকে কয়েক গুণ বেশি। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু ধরনের ক্যানসারও হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, সকালে হাঁটার রয়েছে বাড়তি কিছু সুফল। ভোরের নির্মল বাতাসে হাঁটলে ফুসফুস পরিষ্কার থাকে, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। সেইসঙ্গে হৃৎস্পন্দনের হারও থাকে স্বাভাবিক।
সকালে হাঁটা না বিকেলে
তাদের দাবি, সকালে হাঁটাহাঁটি করলে হজমশক্তি উন্নত হয়। ফলে গ্যাস, অম্বল বা হজমজনিত অস্বস্তি দূর হয়। আর হজম ঠিক থাকলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে আসে। তা ছাড়া দিনের শুরুতে হাঁটলে শরীর ও মন দুই-ই সতেজ থাকে, কাজের উদ্যম বাড়ে। এমনকি অনিদ্রায় ভুগলেও সকালের দিকে হাঁটাহাঁটি উপকারী হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো ওজন কমাবেন কীভাবে?
উত্তর: এই কার্যসিদ্ধির অনেকগুলো পথ রয়েছে। তবে সবথেকে সহজ পথ হলো হাঁটা। এ ক্ষেত্রে দিনে কিছুটা সময় হাঁটলেই ওজন কমবে।
হাঁটা বলতে আমরা যা বুঝি, সেই হেলেদুলে চলায় তেমন লাভ হয় না। বরং ওজন কমাতে হাঁটতে হয় কিছুটা জোরে। এ ক্ষেত্রে শ্বাস ফেলে, ঘাম ঝরে। এই উপায়ে হাঁটলেই কমবে ওজন। হাঁটার এই নির্দিষ্ট ধরনকে বলে ব্রিস্ক ওয়াকিং।
উঁচু রাস্তায় হাঁটতে পারেন
মেডিকেল নিউজ টুডে জানাচ্ছে, দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে একটু উঁচু রাস্তায় হাঁটতে পারেন। এতে দ্রুত ক্যালরি ঝরবে। এ ক্ষেত্রে সিঁড়ি চড়তে পারেন বা কোনো ব্রিজে উঠতে পারেন। দেখা গিয়েছে, এমন কৌশল মেনে চললে ওজন কমার হার বৃদ্ধি পায়। তবে হাঁটুতে ব্যথা থাকলে সিঁড়ি ওঠানামা করার প্রয়োজন নেই। এতে হাঁটুর ক্ষয় হয়। বরং খাড়া রাস্তায় চলার চেষ্টা করুন। আশা করছি সমস্যা হবে না।
হাঁটতে হাঁটতে রেজিস্টেন্স ট্রেনিং
হাঁটলেই ওজন কমে। তবে ওজন খুব বেশি হলে শুধু হেঁটে তা কমাতে অনেকটা সময় লেগে যায়। সে ক্ষেত্রে হাঁটার পাশাপাশি রেজিস্টেন্স ট্রেনিং করতে পারেন। ধরুন সকালে হাঁটতে বেরোলেন। তারপর হাঁটার মাঝেই পার্কের কোথাও একটু দাঁড়িয়ে রেজিস্টেন্স ট্রেনিং করুন। এ ক্ষেত্রে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ অনায়াসে করতে পারেন। চেষ্টা করুন স্কোয়াট, পুশআপ, ট্রাইসেপ ডিপস, বার পিজ, লাউঞ্জ করার। এসব ব্যায়ামেই ওজন কমে, পেশির শক্তিও বৃদ্ধি পায়।
দিনে ৩০ মিনিট হাঁটা
ওজন কমাতে চাইলে দিনে মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটলেই চলে। সে ক্ষেত্রে একবারে সময় বের করতে না পারলেও চলবে। সকালে ১৫ মিনিট, বিকেলে ১৫ মিনিট–এভাবেও হাঁটতে পারেন। এই উপায়ে সপ্তাহে ৭ দিন হাঁটলেই উপকার মিলবে। তবে সপ্তাহে ৫ দিনের কম হাঁটা যাবে না।
চিকিৎসাবিজ্ঞান জানাচ্ছে, সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হাঁটা হলো মাস্ট। এই সময়টুকু চলতে পারলেই মিলবে উপকার।
ডায়েটে নজর দিন
শুধু হেঁটে লাভ হবে না। বরং আপনাকে ডায়েটে মন দিতে হবে। খাওয়া যাবে না ঘি, তেল, মাখন, বাইরের ফাস্ট ফুড ইত্যাদি। খেতে পারেন ঘরে তৈরি করা খাবার। প্লেটে থাকুক শাকসবজি, ফল। এই খাবারে থাকা ফাইবার শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এমনকি ওজনও কমায়। তাই হাঁটার পাশাপাশি ডায়েটে বদল আনুন।









