ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়াবেন কে, অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ আপনাদের মেয়ে আর নেই, মধ্যরাতে শাশুড়িকে ফোনে জানিয়ে লাপাত্তা জামাই জেমসের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে সময় কখন চলে যায় টেরই পাই না এখন যারা ক্ষমতা উপভোগ করে, তারা তো নির্বাচন চাইবে না: জিএম কাদের হজ কার্যক্রমে কেউ ঘুষ নিলে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে: ধর্ম উপদেষ্টা শাম্মির বাসায় চাঁদাবাজির আগে উপদেষ্টা আসিফের সঙ্গে আমার কথা হয় : অপু ফেব্রুয়ারিতে যেন নির্বাচন হয়, সতর্ক থাকতে হবে : দুদু ইউরোপ জুড়ে দাবদাহ, দাবানল মোকাবিলায় হাজার হাজার দমকল কর্মী এবার শিক্ষার্থীদের যমুনা সেতু অবরোধ, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ যোগাযোগ বন্ধ স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি

সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / ০ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহীত ছবি

সিলেটের প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রভাবশালীদের লাগামহীন লুটপাটে বিলীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে রাস্তায় আটকে দেয়া হয়েছে পাথর বোঝাই বেশ কয়েকটি ট্রাক। বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর শুরু হওয়া এই অভিযানে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র চুরি হওয়া কয়েকটি পাথরবোঝাই বোটও জব্দ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের ধলাই নদীর তীরবর্তী সাদাপাথর এলাকা থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান জোরদার হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথরগুলো পুনরায় নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাধীন সিলেট ক্লাবের সম্মুখে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান আছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে এই অভিযান চালাচ্ছি। সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা এই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

এর আগে, সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুটপাট ঠেকানো ও লুটের পাথর পুনঃস্থাপনে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিলেট ও বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সিলেট সার্কিট হাউজে সর্বস্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্মিলিত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিদ্ধান্তগুলো হলো- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথ বাহিনীসহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন। অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ বন্ধ করার জন্য অভিযান চলমান থাকবে। পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সকলকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হবে।

এরও আগে, পাথর লুটের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, চার বছর পরিবেশকর্মী হিসেবে সিলেটে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছি, এখন উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।

এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে সিলেট প্রশাসন। ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া, বুধবার সাদাপাথর পরিদর্শনে যায় দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মোহাম্মদ নাজমূস সাদাতের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি দল।

পরে দুদক জানায়, যাদের যোগসাজশে নির্বিচারে পাথর লুট হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এ ধরনের লুটপাটে স্থানীয় প্রশাসনের দায় সবচেয়ে বেশি। পর্যটন খাতের ক্ষতির সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান

আপডেট সময় : ১২:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

সিলেটের প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রভাবশালীদের লাগামহীন লুটপাটে বিলীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে রাস্তায় আটকে দেয়া হয়েছে পাথর বোঝাই বেশ কয়েকটি ট্রাক। বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর শুরু হওয়া এই অভিযানে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র চুরি হওয়া কয়েকটি পাথরবোঝাই বোটও জব্দ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের ধলাই নদীর তীরবর্তী সাদাপাথর এলাকা থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান জোরদার হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথরগুলো পুনরায় নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাধীন সিলেট ক্লাবের সম্মুখে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান আছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে এই অভিযান চালাচ্ছি। সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা এই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

এর আগে, সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুটপাট ঠেকানো ও লুটের পাথর পুনঃস্থাপনে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিলেট ও বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সিলেট সার্কিট হাউজে সর্বস্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্মিলিত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিদ্ধান্তগুলো হলো- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথ বাহিনীসহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন। অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ বন্ধ করার জন্য অভিযান চলমান থাকবে। পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সকলকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হবে।

এরও আগে, পাথর লুটের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, চার বছর পরিবেশকর্মী হিসেবে সিলেটে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছি, এখন উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।

এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে সিলেট প্রশাসন। ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া, বুধবার সাদাপাথর পরিদর্শনে যায় দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মোহাম্মদ নাজমূস সাদাতের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি দল।

পরে দুদক জানায়, যাদের যোগসাজশে নির্বিচারে পাথর লুট হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এ ধরনের লুটপাটে স্থানীয় প্রশাসনের দায় সবচেয়ে বেশি। পর্যটন খাতের ক্ষতির সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।