তারেক রহমান : অনেক প্রত্যাশার নাম

- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৩০ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভূদৃশ্য সর্বদা তার কারিশম্যাটিক নেতাদের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে, যাদের উত্তরাধিকার জাতির গতিপথকে প্রভাবিত করে চলেছে। সমসাময়িক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে দাঁড়িয়ে আছেন, ঐক্যের প্রতীক এবং দেশের ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো হিসাবে সমাদৃত।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় থেকে বিরোধী শক্তিগুলোকে একত্রিত করার এবং গণতন্ত্র, শাসন ও জাতীয় পরিচয় সম্পর্কে সংঘবদ্ধ শক্তি গঠনে ভূমিকার মাধ্যমে তারেক রহমানের নেতৃত্বের স্বরূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তার নেতৃত্বের ধরন, তার কৌশলগত বিচক্ষণতা, আদর্শিক বিভাজন পেরিয়ে সমর্থন জোগাড় করার ক্ষমতা এবং তার দলের মূলনীতির প্রতি তার অটল অঙ্গীকারে চিহ্নিত। আইনি চ্যালেঞ্জ, নির্বাসন এবং লক্ষ্যবস্তুযুক্ত রাজনৈতিক প্রচারণার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও তিনি বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর ওপর তার প্রভাব বজায় রেখেছেন। তার বক্তৃতা এবং নীতি প্রস্তাবগুলো প্রায়ই ন্যায়বিচার, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় মর্যাদার বিষয়গুলোকে তুলে ধরে, যা স্থিতাবস্থায় হতাশ একটি প্রজন্মের জন্য আশার মহাবিন্দু হয়ে উঠেছে। তাছাড়া তারেক রহমানের মর্যাদা আরও দৃঢ় হয় কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার বিরুদ্ধে তার প্রতিরোধ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রক্ষায় তার ভূমিকার চারপাশে নির্মিত বয়ানে। তার সমর্থকরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দমন-পীড়নের সময়কালে তার দৃঢ়তাকে তার সততা এবং সাহসের প্রমাণ হিসাবে উল্লেখ করেন। এ গুণাবলি, তার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলিত হয়ে, একজন নেতা হিসাবে তার খ্যাতি সুদৃঢ় করেছে-যার প্রভাব দলীয় সীমানা অতিক্রম করে, বৈশ্বিক দিগন্তে উদ্ভাসিত। তারেক রহমানের ক্ষেত্রে এটি কেবল তার রাজনৈতিক অর্জনকেই অন্তর্ভুক্ত করে না বরং জাতির প্রতি তার পরিবারের অবদানের প্রতীকী ওজনকেও সমৃদ্ধ করে। তার নেতৃত্বকে তার পিতা, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তার মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গৃহীত আদর্শের ধারাবাহিকতা এবং বিবর্তন হিসাবে দেখা হয়। এ আন্তঃপ্রজন্মীয় উত্তরাধিকার তারেক রহমানকে একটি অনন্য কর্তৃত্ব এবং দায়িত্ব দিয়ে জাতীয় চেতনায় তার অবস্থানকে আরও উন্নত করেছে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বের যে কোনো মূল্যায়নে তার পারিবারিক পটভূমির গভীর প্রভাব বিবেচনা করা উচিত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘জিয়া পরিবার’ একটি কেন্দ্রীয় স্থান দখল করে আছে। তার বাবা জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সামরিক কর্মকর্তা, যিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশের গতিপথ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। অস্থির সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং জাতীয় ঐক্যের প্রচারে জিয়াউর রহমানের প্রচেষ্টার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তার মা বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়েছেন। ১৯৯০ এবং ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে তার নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত করা এবং সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি সম্প্রসারণের প্রচেষ্টায় চিহ্নিত ছিল। এ পরিবেশে বেড়ে ওঠা, তারেক রহমান ছোটবেলা থেকেই শাসনব্যবস্থা, নীতিনির্ধারণের জটিলতা এবং নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। বিএনপির ভেতরে তারেক রহমানের উত্থান স্বয়ংক্রিয় বা অপ্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল না। তিনি দলের সাধারণ সদস্য হয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন, যেখানে তিনি সাংগঠনিক দক্ষতা এবং তৃণমূলের সমর্থন সংগ্রহের ক্ষমতা প্রদর্শনে সক্ষম হন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং জটিল রাজনৈতিক গতিশীলতা যথাযথভাবে পরিচালনা করার ক্ষমতা তাকে বিএনপির ভেতরে সিনিয়র নেতৃত্বের পদে নিয়ে যায়। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) ভূমিকায় তার পদোন্নতি দলের ভেতরে প্রজন্মান্তরে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বন্দিদশা এবং রাজনৈতিক নির্বাসনের সময়কালসহ উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও তারেক রহমান দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছেন। প্রতিকূলতার মুখে তার ধৈর্যশীলতা দলীয় সদস্য এবং সমর্থকদের মধ্যে আনুগত্যকে অনুপ্রাণিত এবং তার নেতৃত্বের অবস্থানকে আরও সুসংহত করেছে।
উল্লেখ্য, ক্ষমতাসীন ড. ইউনূস বিএনপির সঙ্গে সুন্দর যোগাযোগ রক্ষা করলেও জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অবমাননা থেকে বিরত নয় জামায়াত ও এনসিপি, যা সম্প্রতি রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছে। (সূত্র : ইনকিলাব, ১৪.০৭.২০২৫) অন্যদিকে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হিসাবে ড. ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক-রাজনৈতিক, আইনি ও নির্বাচন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কেও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকরা যুক্তি দেন, বিএনপির দলীয় ব্যক্তিত্বদের লক্ষ্য করে অপপ্রচার ও ‘মব’ জাস্টিসকে ব্যবহার আইনের শাসনকে দুর্বল করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ওপর জনসাধারণের আস্থা নষ্ট করেছে। এ চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয়ে তারেক রহমানের প্রতিকূলতা সহ্য করা এবং গণতান্ত্রিক নীতি রক্ষা করতে সক্ষম নেতা হিসাবে তার খ্যাতিকে আরও দৃঢ় করেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত এক পুরোনো কৌশল। প্রকাশ্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো এ অপপ্রচারকে ঘিরে যে কুৎসা, বিদ্রূপ ও কটাক্ষ ছড়ানো হয়েছে, তা শুধু একজন রাজনৈতিক নেতাকে নয়-তার সমর্থকদের আবেগকেও আহত করেছে। কিন্তু ১৩ জুলাই এবং তার পরের দিনগুলো আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে ভিন্ন এক চিত্র। ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনতার সক্রিয় প্রতিক্রিয়া, প্রতিবাদ, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, সামাজিক মাধ্যমে সংহতি জানানোর ঢল-সব মিলিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তারেক রহমানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা এখনো অটুট। এ ভালোবাসা হঠাৎ আসেনি, এটি এসেছে দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক ত্যাগ, বক্তব্যের স্বচ্ছতা এবং নেতৃত্বের আশ্বাস থেকে। বহু সমালোচনার মধ্যেও তারেক রহমান এক নতুন ধরনের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছেন-যেখানে তিনি সরাসরি মাঠে না থেকেও দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং কর্মীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এ যেন এক ‘অঙ্গীকারের রাজনীতি’, যেখানে কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন তারেক রহমান। অপপ্রচার এক সময় কেটে যায়, কিন্তু সত্য ও বিশ্বাসের জয় অবশ্যম্ভাবী। জনগণ জুলাই মাসে তা আরও একবার প্রমাণ করল। অনেকেই বলছেন, তারেক রহমান এখন আর শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, তিনি অনেকের কাছে ‘প্রত্যাশার প্রতীক’। ইতিহাস বলে, অপপ্রচার আর বাধা-এই দুটো জয় করেই বড় নেতা হন। আর তারেক রহমানের জন্য জুলাইয়ের প্রথম পক্ষ ছিল ঠিক এমন এক মুহূর্ত-যে মুহূর্তে তিনি অপপ্রচারকে জয় করে আবারও প্রমাণ করলেন, তিনি ফিরে আসছেন। অর্থাৎ তারেক রহমানের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা, আইনগত ও রাজনৈতিক নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এ ধারণাকে দৃঢ় করে যে তিনি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা বিষয়টিকে তার স্থায়ী জনপ্রিয়তা এবং নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থার নিদর্শন হিসাবে দেখেন। আসলে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে জনগণ জাতীয় আদর্শ এবং সম্মিলিত অগ্রযাত্রার অনুপ্রেরণা হিসাবে বিবেচনা করেন। নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা কিংবা প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিতর্কের অন্যতম আলোচিত বিষয়। অভিযোগ উঠেছে, ড. ইউনূসের অনুসারীরা আসন্ন নির্বাচন স্থগিত করার পক্ষে সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এর পেছনে তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ অথবা বিএনপির সম্ভাব্য বিজয় প্রতিরোধের উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে ধারণা করা হয়। বিএনপি এ উদ্যোগগুলোকে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা দুর্বল করার এবং ক্ষমতাসীন অভিজাত শ্রেণির আধিপত্য বজায় রাখার কৌশল হিসাবে ব্যাখ্যা করছে।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন বর্জনের অনেক আগে থেকেই তারেক রহমান নিয়মিতভাবে সময়োপযোগী ও স্বচ্ছ নির্বাচনের গুরুত্ব জাতির সামনে তুলে ধরছেন এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মৌলিক ভিত্তি হিসাবে এ বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছেন। নির্বাচন আয়োজনের অনিবার্যতা এবং ২০২৬ সালে সরকার গঠনে বিএনপির বিজয়ের বিষয়ে তার আত্মবিশ্বাস, তার কৌশলগত অবস্থান ও গণভিত্তির প্রতি আস্থা প্রতিফলিত করে। এ অবস্থান জামায়াত-এনসিপির মতো বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে আরও সক্রিয় করেছে এবং ‘পিআর’ বা নির্বাচনি সংস্কারের দাবিকে জোরদার করা হচ্ছে। আসলে নির্বাচন স্থগিতকরণ নিয়ে চলমান বিতর্ক দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মৌলিক চ্যালেঞ্জগুলোকে স্পষ্টভাবে সামনে নিয়ে এসেছে। অতীতে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে নির্বাচনি সময়সূচি পরিবর্তন, প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা এবং বিরোধী কণ্ঠ দমনের মতো কর্মকাণ্ড নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতাকে ক্ষুণ্ন করেছিল। ওই প্রেক্ষাপটে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি তারেক রহমানের প্রতিশ্রুতি তাকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সমর্থক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং জাতীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তার অবস্থান আরও সুসংহত বলে বিবেচিত হচ্ছে। বলা বাহুল্য, ২০২৬ সালকে ঘিরে বিএনপি ও তারেক রহমানের সমর্থকদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট প্রত্যাশা গড়ে উঠেছে। তাদের ধারণা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত হবে। যদিও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত বা ব্যাহত করার নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, সমর্থকদের বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত জনগণের ইচ্ছাই নির্ধারক ভূমিকা রাখবে এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি নতুন সরকার গঠন করবে।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক কৌশল ও সংগঠন পুনর্গঠনের পদ্ধতিতে নিকোলো মেকিয়াভেলির দর্শনের স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায়। মেকিয়াভেলি ‘দি প্রিন্স’-এ যেমন বলেছিলেন-‘ভয় পাওয়া ভালো, ভালোবাসা তো পরে দেখা যাবে’-তারেক রহমানও রাজনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে কঠোর শৃঙ্খলা ও দৃঢ় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। বিশেষত, বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও দুর্বলতা দূর করতে তার কঠোর অবস্থান, মেকিয়াভেলির ‘virtu’ ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ-যেখানে রাজনৈতিক দক্ষতা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্তের গুরুত্ব বেশি। অন্যদিকে সেনেকার স্টোইক দর্শন-যেখানে আত্মসংযম, নৈতিকতা ও অন্তর্দৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ-তাও তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রতিফলিত হয়েছে। নির্বাসন, রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রচারণামূলক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে নেতৃত্ব দেওয়া, দলকে সংগঠিত রাখা এবং আন্তর্জাতিক লবিং চালিয়ে যাওয়া-এসবই বৈরী পরিবেশের ভেতরেও নেতৃত্বের বিকাশের ইঙ্গিত দেয়। সেনেকার উক্তি, ‘কখনো কখনো বেঁচে থাকাটাই সাহসের’, বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক-কারণ কঠিন সময়ে রাজনৈতিক সচেতনতা ও দৃঢ়তা ধরে রাখা ছিল তারেক রহমানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের গুণ।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক যাত্রার বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতে, তিনি কেবল রাজনৈতিক বংশধর নন, বরং জাতীয় ঐক্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। বর্তমান সময়ে তার নেতৃত্ব কৌশলগত বিচক্ষণতা, স্থিরতা এবং গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি অঙ্গীকার দ্বারা চিহ্নিত। রাজনৈতিক বিতর্ক, আইনি জটিলতা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিলম্বের মতো চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি পরিবর্তন ও নতুনত্বের প্রতীক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন। তার ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক উত্থানের ইতিহাস জনমনে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন যুগের প্রত্যাশা তৈরি করেছে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, তারেক রহমানের নেতৃত্ব শুধু বিএনপি বা তার মিত্রদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না; বরং গোটা দেশের গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থার গতিপথও নির্ধারণ করবে। ঐক্যের প্রতীক হিসাবে তার মর্যাদা কেবল ব্যক্তিগত ক্যারিশমা বা রাজনৈতিক বংশের কারণে নয়, বরং দেশের জন্য একটি সুস্পষ্ট ও আকর্ষণীয় ভিশন উপস্থাপনের ক্ষমতার মধ্যেও নিহিত। বাংলাদেশ যখন একটি নতুন অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে, তখন তারেক রহমানের প্রভাব জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জনগণের প্রত্যাশা।
প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম : সাবেক চেয়ারম্যান, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়