ঢাকা ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দ ২,৯৫৬ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আলোচনার শর্তাবলি প্রকাশযোগ্য নয় : অর্থ উপদেষ্টা সমুদ্রপথে দুবাইতে কাঁঠাল রপ্তানি করলো বাংলাদেশ আটাবের দুর্নীতি-জালিয়াতির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জামের বীজের গুঁড়া এত উপকারী কিডনি ক্যান্সারে বাড়ছে মৃত্যু, পুরুষদের ঝুঁকি বেশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম নিয়ে রিভিউয়ের রায় বৃহস্পতিবার পোর্তোর সাবেক অধিনায়ক কিংবদন্তি কস্তার মৃত্যু খুব শিগগিরই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে: মির্জা ফখরুল নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে এসপি-ওসিদের বদলি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার: ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:০২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসা থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের (রিয়াদ) বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক মোট দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কলাবাগান থানায় আলাদা একটি মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।

ডিএমপির মুখপাত্র জানান, রিমান্ডে দেওয়া রিয়াদের তথ্যমতে, রাজধানীর নাখালপাড়ায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে চেকটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগামী ২ আগস্ট চেকটি ক্যাশ হওয়ার কথা ছিল।

এর আগে গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের ওই বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর আরও ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন পাঁচজন।তারা হলেন-মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), নাটোরের লালপুরের বাসিন্দা সাদমান সাদাব (২১), মো. আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহীম হোসেন (২৪) এবং আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)।

তাদের মধ্যে রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা এবং ধানমন্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন। এ ছাড়া ইব্রাহীমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামে এবং আমিনুল বাড্ডা আলাতুন্নেছো স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ইব্রাহীম হোসেন মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক। মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব সদস্য।

পরে রাতেই চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তিনজনকে বহিষ্কার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চারজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।২৭ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত তাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সাত দিনের রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ এবং সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম হোসেন, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদ ও অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা।

এক পর্যায়ে সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা দেন। এরপর ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মুঠোফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যায়।

২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আবার রিয়াদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে। এ সময় অন্য আসামি অপু পালিয়ে যান।

এদিকে চাঁদাবাজির ঘটনায় নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতিত সারাদেশে সব কমিটি স্থগিত করা হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার: ডিএমপি

আপডেট সময় : ০৩:০২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

ঢাকার গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসা থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের (রিয়াদ) বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক মোট দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কলাবাগান থানায় আলাদা একটি মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।

ডিএমপির মুখপাত্র জানান, রিমান্ডে দেওয়া রিয়াদের তথ্যমতে, রাজধানীর নাখালপাড়ায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে চেকটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগামী ২ আগস্ট চেকটি ক্যাশ হওয়ার কথা ছিল।

এর আগে গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের ওই বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর আরও ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন পাঁচজন।তারা হলেন-মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), নাটোরের লালপুরের বাসিন্দা সাদমান সাদাব (২১), মো. আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহীম হোসেন (২৪) এবং আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)।

তাদের মধ্যে রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা এবং ধানমন্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন। এ ছাড়া ইব্রাহীমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামে এবং আমিনুল বাড্ডা আলাতুন্নেছো স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ইব্রাহীম হোসেন মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক। মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব সদস্য।

পরে রাতেই চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তিনজনকে বহিষ্কার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চারজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।২৭ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত তাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সাত দিনের রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ এবং সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম হোসেন, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদ ও অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা।

এক পর্যায়ে সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা দেন। এরপর ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মুঠোফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যায়।

২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আবার রিয়াদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে। এ সময় অন্য আসামি অপু পালিয়ে যান।

এদিকে চাঁদাবাজির ঘটনায় নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতিত সারাদেশে সব কমিটি স্থগিত করা হয়।