কিডনি ক্যান্সারে বাড়ছে মৃত্যু, পুরুষদের ঝুঁকি বেশি

- আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।
গবেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, পুরুষদের মধ্যে রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির জন্য ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন এবং কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শকে দায়ী করা হচ্ছে।
ইউরোপিয়ান ইউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. আলেসান্দ্রো লারচার। তিনি ও তাঁর সহগবেষক দল দেখিয়েছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭৯১ জনে পৌঁছাতে পারে এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৬১ জনে।
এতে আক্রান্তের হার ৭২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ৯৬ শতাংশ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষণায় আরও জানা গেছে, জিনগত ত্রুটি ও জীবনধারাগত অভ্যাস—এই দুই ধরনের কারণ কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ কিছু জিন যেমন VHL, MET, PTEN, TSC1/2 প্রভৃতিতে ত্রুটি থাকলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পাশাপাশি পারিবারিক ইতিহাস, জাতিগত ভিন্নতা এবং ভূগোলভিত্তিক বিষয়গুলিও এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। ধূমপান, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পরিবেশ দূষণ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে।
গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা থাকলে ৫ বছরের মধ্যে বেঁচে থাকার হার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, তবে অনুন্নত ব্যবস্থাপনায় এই হার অনেকটাই কমে যায়। গবেষণাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, এসব তথ্য ব্যবহার করে সময়মতো স্ক্রিনিং, সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।
গবেষক ড. রিকার্ডো কাম্পির মতে, এখনই সময় কার্যকর প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নেওয়ার। তাঁর ভাষায়, এই রোগ অনেকটাই প্রতিরোধযোগ্য, যদি ঝুঁকি ফ্যাক্টরগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। পরিবারের কেউ যদি আগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও জেনেটিক টেস্টিং অপরিহার্য হয়ে ওঠে। স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সঠিক জীবনধারার মাধ্যমেই ভবিষ্যতের মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব বলে গবেষকেরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।