৩৬ দিনে ফ্যাসিবাদের পতন হয়নি
রক্তের সিঁড়ি তৈরি হয়েছে ১৬ বছরের আন্দোলনে : সালাহউদ্দিন আহমদ

- আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
- / ১ বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে যেন আর কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনর্জন্ম না হয়, সেজন্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানসিক সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন এবং গত ১৬ বছরের স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে যারা প্রাণ দিয়েছেন, গুম হয়েছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন কিংবা স্থায়ী অঙ্গহানি বরণ করেছেন, তারা সবাই জাতীয় বীর।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র চব্বিশের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিনেই একটি ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, তা নয়। এই রক্তের সিঁড়ি তৈরি হয়েছে দীর্ঘ ১৬ বছরের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
আজ রোববার গুলশান বিএনপি’র চেয়ারপারসন অফিসে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত এক কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য এ কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি।
মানবাধিকার সংস্থার তথ্য তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, পুলিশি নির্যাতনসহ নানা প্রতিহিংসামূলক হামলায় সাত হাজার ১৮৮ জন ভুক্তভোগী হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০৯ জন গুমের শিকার, তার মধ্যে অনেকে এখনো ফিরে আসেনি, আমার মতো সৌভাগ্যবান নয় তারা। দুই হাজার ৬৯৩ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। জুলাই আন্দোলনে ১৪ শ’র বেশি হত্যা, ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত এবং প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি দুই চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এখনো সঠিক তালিকা প্রণয়ন করতে পারেননি। হাসপাতালের রেজিস্টার গায়েব, গণকবরের সন্ধান অজানা- তবুও উদ্যোগ নিতে হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘শহীদ ও আহতদের প্রতি রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাদের জন্য রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও দলীয়ভাবে আমাদের করণীয় রয়েছে এবং তা আমরা পালন করব, ইনশা আল্লাহ।’
মানসিক ও দৃষ্টিভঙ্গির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন করলেই হবে না; যারা রাষ্ট্র চালাবে এবং যারা নাগরিক- উভয়ের মানসিক পরিবর্তন জরুরি। শুধু সরকারের কাছ থেকে সব আশা না করে, জনগণকেও দেশের জন্য কী করা যায় তা ভাবতে হবে।’
তিনি বলেন, স্বাধীনতায় শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন এবং ২০২৪ সালের আন্দোলনের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে মানবিক, কল্যাণমুখী ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে হবে। যারা আজ অন্ধত্ব বরণ করেছেন বা অঙ্গ হারিয়েছেন, তাদের সন্তানরা যেন কাঙ্ক্ষিত সমাজ ও রাষ্ট্র দেখতে পায়- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনর্জন্ম না হয়, সেজন্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানসিক সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারে আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।