মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে ভ্রমণ

- আপডেট সময় : ০২:০৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / ৩৩ বার পড়া হয়েছে
শৈশব থেকেই এক মানসিক সমস্যায় ভুগছেন ক্যামেরুন মোফিড। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ সমস্যার নাম—অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার (ওসিডি)। এ সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট ধরনের কিছু চিন্তার জালে জড়িয়ে থাকেন। সমস্যাটি তীব্র হয়ে উঠলে জীবনটাই বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে তাঁর। মজার ব্যাপার হলো, পৃথিবীর সব দেশ ঘুরতে গিয়ে সেই সমস্যার উপশম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানি-মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন তরুণ ক্যামেরুন মোডিফ।
মানসিক সমস্যার জন্য দুর্বিষহ হয়ে ওঠা জীবনধারা থেকে পালাতেই প্রথমে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্যামেরুন। পরে এই ভ্রমণই হয়ে ওঠে তাঁর মানসিক পীড়া উপশমের মাধ্যম। বয়স তখন ২০ বছর। একদিন কম্পিউটারে দেখছিলেন, কত মানুষ পৃথিবীর সব দেশে ভ্রমণ করেছেন। দেখলেন, সংখ্যাটা মহাশূন্যে ভ্রমণ করা মানুষের চেয়েও কম। তখনই মাথায় এল, এ কাজটা তো তিনিও করতে পারেন।কম খরচে এক দেশ থেকে আরেক দেশ
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সে পৃথিবীর সব দেশে ভ্রমণ করা ব্যক্তির বয়স ২১। ২০ বছর বয়সী মোফিড উপলব্ধি করলেন, সেই রেকর্ড ভাঙা তাঁর পক্ষে বাস্তবসম্মত কোনো লক্ষ্য নয়। তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘নোমাডম্যানিয়া’র রেকর্ডের শর্ত একটু আলাদা। কেবল সব দেশে যাওয়াই নয়, বরং স্থানীয়দের সঙ্গে মেশা এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক বা সাংস্কৃতিক স্থানে যাওয়াকে শর্ত হিসেবে রেখেছে তারা। সেই সময়কার রেকর্ড অনুযায়ী সবচেয়ে কম বয়সে যিনি এ কাজ করতে পেরেছিলেন, তাঁর বয়স ছিল সাড়ে ২৫ বছর। ২০ বছর বয়সী মোফিড এই রেকর্ড ভাঙার সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইলেন।
পড়াশোনার ফাঁকে ঘোরাঘুরি এবং টেনিসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সূত্রে আগেই এক শর মতো দেশ ঘোরা হয়ে গিয়েছিল ক্যামেরুন মোডিফের। লক্ষ্য পূরণ করতে বাকি ছিল নব্বইয়ের কিছু বেশিসংখ্যক দেশ। ভ্রমণের বিশাল খরচ জোগাতে একটি ইভেন্ট মার্কেটিং কোম্পানি খোলেন মোফিড। কীভাবে কম খরচে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়া যায়, তা নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা করতে হয়েছিল তাঁকে।
কম খরচে এক দেশ থেকে আরেক দেশ
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সে পৃথিবীর সব দেশে ভ্রমণ করা ব্যক্তির বয়স ২১। ২০ বছর বয়সী মোফিড উপলব্ধি করলেন, সেই রেকর্ড ভাঙা তাঁর পক্ষে বাস্তবসম্মত কোনো লক্ষ্য নয়। তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘নোমাডম্যানিয়া’র রেকর্ডের শর্ত একটু আলাদা। কেবল সব দেশে যাওয়াই নয়, বরং স্থানীয়দের সঙ্গে মেশা এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক বা সাংস্কৃতিক স্থানে যাওয়াকে শর্ত হিসেবে রেখেছে তারা। সেই সময়কার রেকর্ড অনুযায়ী সবচেয়ে কম বয়সে যিনি এ কাজ করতে পেরেছিলেন, তাঁর বয়স ছিল সাড়ে ২৫ বছর। ২০ বছর বয়সী মোফিড এই রেকর্ড ভাঙার সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইলেন।
পড়াশোনার ফাঁকে ঘোরাঘুরি এবং টেনিসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সূত্রে আগেই এক শর মতো দেশ ঘোরা হয়ে গিয়েছিল ক্যামেরুন মোডিফের। লক্ষ্য পূরণ করতে বাকি ছিল নব্বইয়ের কিছু বেশিসংখ্যক দেশ। ভ্রমণের বিশাল খরচ জোগাতে একটি ইভেন্ট মার্কেটিং কোম্পানি খোলেন মোফিড। কীভাবে কম খরচে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়া যায়, তা নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা করতে হয়েছিল তাঁকে।কঠিন সে যাত্রা
২০২২ সালের শেষ দিকে একখানা ব্যাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেন মোফিড। ঘুরতে শুরু করলেন দেশ থেকে দেশে। ভ্রমণটাকে অর্থবহ করে তুলতে প্রতিটি দেশে অন্তত চার দিন থেকেছেন তিনি। সবচেয়ে কম খরচে থাকার ব্যবস্থাও করেছেন। দীর্ঘ ভ্রমণে কদাচিৎ সঙ্গী পেয়েছেন। আপনজনদের থেকে দূরে থাকায় একাকীত্বেও ভুগেছেন। ভিনদেশী মানুষের জীবনপদ্ধতি দেখে ভালো লাগত তাঁর। অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্বও করেছেন। অনেকের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ আছে। তবে দীর্ঘ ভ্রমণে শরীরের ওপর ধকলও গিয়েছে খুব। আলজেরিয়ায় গিয়ে ১৫ ঘণ্টা বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি। হতাশাও চেপে ধরছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর সেই আলজেরিয়া ভ্রমণও হয়ে উঠল দারুণ। রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে যেসব দেশকে অনিরাপদ ভাবা হয়, সেখানে গিয়েও সাধারণ মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন মোফিড।
শেষটা সুন্দর
গত এপ্রিলে উত্তর কোরিয়ার পিয়ং ইয়াং পৌঁছান ২৫ বছর বয়সী মোফিড। অংশ নেন আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে। এই দেশটির ভ্রমণের মাধ্যমেই জাতিসংঘ স্বীকৃতি ১৯৫টি দেশ ভ্রমণ সম্পন্ন হয় তাঁর। সেই সঙ্গে গড়েন নোমাডম্যানিয়ার বিশ্বরেকর্ড। অবশ্য সেই রেকর্ড বেশিদিন টেকেনি। তাতে কী! মোফিডের জীবন বদলে গেছে। আগে মানসিক রোগটি তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করত। এখন তিনিই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
বিশ্বভ্রমণের আগে রোগটির কারণে কোনো অনিশ্চয়তার অনুভূতি তাঁকে যেভাবে ভোগাত, এখন আর তেমনটা হয় না। বরং পৃথিবীজুড়ে অনিশ্চিতভাবে ভ্রমণ করে নিজের লক্ষ্য পূরণ করায় তিনি এখন জানেন, অনিশ্চয়তার মধ্যেও বাঁচতে পারেন তিনি। যেসব অনিশ্চয়তার ভাবনা তাঁকে ভোগাত, সেগুলোকে তিনি জয় করতে পারেন এখন অনেক সহজে। পুরো পৃথিবীতে মানসিক পীড়ায় আক্রান্ত বহু মানুষের সঙ্গেও পরিচয় হয়েছে তাঁর। এটিও তাঁর জন্য ইতিবাচক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনের দিক থেকে এখন অনেকটাই ‘মুক্ত’ এই তরুণ।