নওগাঁয় মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মোনায়েম হোসাইনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত রবিবার রাতে এক জরুরি সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে তাকে বহিষ্কার করে জেলা জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে তাকে দেওয়া নওগাঁ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের দলীয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দলটি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বহিষ্কারের তথ্যটি নিশ্চিত করেন জেলা জামায়াতের আমির খ. মো. আব্দুর রাকিব। নওগাঁ সদর উপজেলা ইনায়েতপুর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে সেখানকার শিক্ষক ও সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মোনায়েম হোসাইনের বিরুদ্ধে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের পোস্টার সংবলিত ছবিতে জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করে তারা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, গত ১৫ সেপ্টেম্বর বৃষ্টির দিন দুপুরে শ্রেণিকক্ষে একা ছিল সে। ওই সময়ে সেখানে ক্লাস নিতে এসে মোনায়েম হোসাইন তাকে বোরকার হিজাব খুলতে বলেন। একপর্যায়ে বাধা দিলেও তিনি শোনেননি। পরে তিনি শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। আরেক দিন একা পেয়ে জোর করে চুম্বন করেন।
পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ঘটনাটি সহপাঠীদের জানালে একইভাবে আরও বেশ কয়েকজন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানায়। পরে ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। গত ২২ সেপ্টেম্বর এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত মোনায়েম হোসাইনকে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি করেন মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক সালেক রহমান।
ওই ঘটনার ১৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের কোনো সদুত্তর দিতে দেখা যায়নি অভিযুক্ত মোনায়েম হোসাইনকে। ওই দিন রাতে ভিডিও ধারণকারী ওই শিক্ষকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে ভুল শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মোনায়েম হোসাইন।
নওগাঁ জেলা জামায়াতের আমির খ. মো. আব্দুর রাকিব বলেন, মোনায়েন হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ওঠার পরই ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এ কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যেখানে মোনায়েম হোসাইনের নৈতিকস্খলন হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে এনায়েতপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টিও উঠে এসেছে। এখন ওই সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। এখন থেকে মোনায়েম হোসাইনের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই।